বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৬ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে কক্সবাজার শহরে এসে সেন্টমার্টিন দ্বীপবাসির সড়ক অবরোধ পাহাড়ী আস্তানা থেকে মালয়েশিয়া পাচারকালে শিশুসহ ৩১ জন উদ্ধার, দুই দালাল আটক সাবের মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পিএস ফিরোজ কক্সবাজারে গ্রেপ্তার মিয়ানমারের বাঘগুনা খালের পাশে রয়েছে নিমার্ণ সামগ্রী ও দুইটি ট্রলার, মাঝি-মাল্লা সহ ১১ জনের হদিস নেই মিয়ানমারের উপজাতি সম্প্রদায়ের ৬৫ নাগরিকের অনুপ্রবেশ চকরিয়ায় কিশোরকে ছুরিকাঘাত : আটক ৪ চকরিয়ায় ফেরিওয়ালার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

পেকুয়ার শিক্ষক আরিফকে হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী যুবলীগ সভাপতি গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক : জমি বিরোধের জেরে প্রথমে অপহরণ করা হয় পেকুয়ার স্কুল শিক্ষক আরিফকে। অপহরণের পর তার পরিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ গুম করতে বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত পুকুরে বস্তাবন্দি অবস্থায় ডুবিয়ে রাখা হয়।

শনিবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীর পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকা থেকে শিক্ষক আরিফ হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী ও মূলহোতা পেকুয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমকে আটকের পর রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় র‍্যাব।

রবিবার দুপুরে কক্সবাজার র‍্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, শনিবার (১২ অক্টোবর) গভীর রাতে র‍্যাব-১৫ ও র‍্যাব-৭ এর একটি যৌথ অভিযানিক দল চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানাধীন পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ওরফে গরু জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

তিনি জানান, পেকুয়া সেন্ট্রাল স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আরিফের সাথে প্রতিবেশী পেকুয়া উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুব লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীরের মধ্যে জায়গা জমির বিরোধ ছিল। এই বিরোধের সুত্র ধরে গত ৫ আগস্টের পর আরিফকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে জাহাঙ্গীর। জাহাঙ্গীর এবং অপর আটক রুবেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য জানিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দুই সপ্তাহ ধরে চলমান অভিযানের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে এবং মূলহোতা ও প্রধান পরিকল্পনাকারীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় র‍্যাব। গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা যায়, তিনি শিক্ষক আরিফকে অপহরণ, ৪০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি, হত্যাকাণ্ড এবং বস্তাবন্দি করে পুকুরে লাশ গুম করার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আরও তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদ চলমান রয়েছে।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর আরিফকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের ১৪ দিন পর গত ১১ অক্টোবর আরিফের বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে আরিফের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মোহাম্মদ আরিফের বাড়ির বসত ভিটার সাথে লাগোয়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং তাঁর ভাই যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আজমগীরের বসত ভিটা। দুই ভিটার দুই জনের বসত ঘরের দূরত্ব ১২-১৫ ফুটের মধ্যে। দুই পরিবারের মধ্যে বসত ভিটা এবং জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি দীর্ঘদিনের পুরানো। আর এই জের ধরেই গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৪৫ এর দিকে নিজ এলাকা থেকে শিক্ষক আরিফকে অপহরণ করা হয়। পরে মুক্তিপণ দাবি করে। ঘটনার পর থেকে স্বজনরা দাবি করে আসছিল, যুবলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং তাঁর ভাই যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আজমগীর মিলেই শিক্ষককে অপহরণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবিত মিলেনি এই শিক্ষক। ১৪ দিন পর দুই ভিটার মধ্যবর্তী পরিত্যক্ত পুকুরে মিলেছে বস্তাবন্দি মরদেহ। যেখানে ইট ভর্তি করে বস্তাবন্দি মরদেহটি রাখা হয়েছিল পুকুরে। মরদেহ উদ্ধারের পর উত্তেজিত জনতা যুবলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম এবং তাঁর ভাই যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক আজগীরের বাড়ি এবং মালিকাধিন মার্কেটে ভাংচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আংশিক পুড়ে যাওয়ার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আর এর পরই পুলিশ বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বাড়ির একটি কক্ষে রক্তের দাগ এবং হত্যা আলামত পেয়েছে পুলিশ। তার উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

পেকুয়া থানার ওসি সিরাজুল মোস্তফা বলেন, অপহরণের ১৪ দিন পর শিক্ষক আরিফের মরদেহ শুক্রবার নিজ বাড়ির পুকুরে থেকে ভাসমান অবস্থায় বস্তাবন্দি লাশ পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্ত শেষ করে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এব্যাপারে দায়ের করা মামলায় রুবেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নানা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তার কাছ থেকে।

তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য জাহাঙ্গীর ও আজমগীর দুই ভাইকে দায়ি করছেন স্বজনরা। তাদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একটি কক্ষে রক্তের দাগ ও আলামত পাওয়া গেছে। এটা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এই দাগ কার রক্তের।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888